বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন

কাঠালিয়ায় রূপচাঁদা বলে বিষাক্ত পিরানহা বিক্রি

কাঠালিয়ায় রূপচাঁদা বলে বিষাক্ত পিরানহা বিক্রি
নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত রেড বেলি পিরানহা। ফাইল ছবি

সাকিবুজ্জামান সবুর:

ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার আমুয়া বন্দর, কৈখালী বাজারসহ বিভিন্নি হাটবাজারে রূপচাঁদা মাছ বলে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রতিনিয়ত বিক্রয় করছে নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত পিরানহা মাছ। আজ বুধবার সকালে উপজেলার কৈখালী বাজারে রেড বেলি পিরানহা বিক্রিয় সময় স্থানীয়রা বাঁধা দিলে মাছ রেখে পালিয়ে যায় ওই মাছ বিক্রেতা। তবে দামে কম হওয়ায় এবং নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত পিরানহা মাছ কিনা চিনতে না পেরে অনেকেই রূপচাঁদা ভেবে কিনেছেন এই মাছ।

এ মাছ প্রতি কেজি অনেক কম মূল্য এবং স্বাদ একটু বেশি থাকার কারণে সাধারণ মানুষের কাছে অনেকটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। অনেকের পছন্দের তালিকায় আছে এ মাছ। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা পিরানহা মাছকে সামুদ্রিক রূপচাঁদা মাছ হিসেবেই বিক্রয় করে থাকেন।

এ পিরানহা মাছ সাধারণত দুই প্রকার। ব্ল্যাক বেলি পিরানহা (কালো পেটওয়ালা) ও রেড বেলি পিরানহা (লাল পেটওয়ালা)। এ মাছের প্রধান আবাসস্থল দক্ষিণ আমেরিকা, ব্রাজিলসহ কয়েকটা দেশের নদীতে।

এ মাছ একটি হিংস্র এবং রাক্ষুসে মাছ। সারা বিশ্বে মানুষখেকো মাছ হিসেবে পরিচিত পিরানহা মাছের মানুষের প্রথম আঘাতের স্থান পায়ের আঙ্গুল। তিন ধরনের শব্দ উৎপন্ন করার মাধ্যমে এদের নিজস্ব একটা ভাষা আছে। জলাশয় বা নদীর অন্যান্য মাছ সমূলে ধ্বংস করে। ক্ষুধার্ত থাকার সময় এক পিরানহা আরেক পিরানহা মাছকেও খেয়ে থাকে। ধারালো দাঁত আর প্রায় মানুষের মতো জিহ্বা থাকার কারণে সে তার লক্ষ্যবস্তুতে শরীরের ১০ গুণ বেশি শক্তিতে কামড় দিতে সক্ষম।

আরো পড়ুন : বাংলালিংক-টেলিটক দিয়ে চালু হলো ‘ন্যাশনাল রোমিং’

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ৩০টি মাছ একটি হরিণকে খেতে সময় নেয় মাত্র ১ ঘণ্টা। এ মাছের এমন কিছু বিষক্রিয়া আছে যা আমাদের পাকস্থলি বিনষ্ট করার প্রধান হাতিয়ার। এক বোতল অ্যালকোহলের চাইতেও এ মাছের ৫০ গ্রাম ওজনের একটি অংশ বেশি ক্ষতিকর।

পিরানহা মাছের চর্বি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে। এ মাছে থাকা ফসফেট আমাদের মূত্র প্রদাহ সৃষ্টি করে, নববিবাহিত নারীর বন্ধ্যত্ব সৃষ্টির অন্যতম কারণ। প্রস্রাবের সঙ্গে শরীর থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যালসিয়াম ও রক্ত বের করে দেয়। পিরানহা মাছ খেলে মানসিক সমস্যাসহ মানুষের দেহে নানান রোগের সৃষ্টি করে।

আরো জানাযায়, আমাদের এলাকায় মূলত রেড বেলি পিরানহা মাছ বেশি পাওয়া যায়। একটি অসাধু চক্র এই মাছ আমাদের এলাকায় আনার পেছনে দায়ী। বাংলাদেশ সরকার এ মাছকে ২০০৮ সালে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

আমুয়া বন্দরের মৎস্য ব্যবসায়ী সোহাগ হোসেন বলেন, এ মাছের চাহিদার ফলে আমরা মাছ বিক্রি করছি। নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত কিনা জানি না। যদি নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত হয় তবে আর বিক্রি করবো না।

কাঠালিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রুহুল আমীন বলেন, এ বিষয়ে আমরা অত্যান্ত তৎপর রয়েছি। গতকাল মঙ্গলবার আমুয়া বাজারে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ পিরানহা উদ্ধার করে নষ্ট করা হয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষের সচেতনতার জন্য ২/১ দিনের মধ্যে মাকিং ও লিফলেট বিতরণ করবো। আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।

 

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  




All rights reserved@KathaliaBarta 2023
Design By Rana